গতকালের সংঘর্ষের ঘটনার পর আজ সকালে কিছু দাবি নিয়ে আল্টিমেটাম দেয় কলেজের শিক্ষার্থীরা। যার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজগুলোর অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠকের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বিকেলে ঘোষণা দেন, সাত কলেজ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছে না। তার মানে সাত কলেজ নিয়ে সমস্যার সমাধান তাহলে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়ার দিকে গেল যেহেতু সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেও ফিরতে ইচ্ছুক না।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের কয়েক মাস আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেও কিছু কলেজকে নেওয়া হয়েছে। তাদের বেলায় কী হবে? দিন শেষে সাত কলেজকে ঘিরে যে সমস্যা সেটির সঙ্গে যুক্ত আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তৈরি হওয়া সংকটও।
আজকে সাত কলেজের দীর্ঘ সংগ্রামের পর না হয় একটা সমাধানে পৌঁছা গেল, কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধীনস্থ কয়েক সহস্রাধিক কলেজকে নিয়ে বিবিধ সমস্যা এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো নিয়ে কী হবে?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাগ করে বিভাগভিত্তিক আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রস্তাব এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে। প্রতি বিভাগের কলেজগুলো বিভাগভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে। আবার অনেকগুলো কলেজের অধীনে আছে উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানও। সেগুলোর বেলায় কী হবে? কলেজগুলোর বিসিএস শিক্ষকেরা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যেতে রাজি হবেন কী না? ফলে বিভাগভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নের সঙ্গে এসব প্রশ্নও জড়িত আছে।
এখন সমাধানের পথে হাঁটতে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে হলো, সংঘর্ষে জড়াতে হলো; এটি তো একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সংকট সমাধানের রাস্তা হতে পারে না। সেই রাস্তায় না হাঁটলে কি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট সমাধানও হবে না?
যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি বেকার হয়, তাদের কথা তো এ রাষ্ট্র ও সরকারকে অবশ্যই ভাবতে হবে। সাত কলেজের মতো সময়ক্ষেপণ ও সংকট ঘনীভূত না করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসতেই হবে, এ হলো কথা।