বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল–পরিকল্পনা বিভাগের গবেষণা অনুসারে, ঢাকা মহানগরে ২০ ভাগ সবুজ এলাকা থাকা প্রয়োজন। অথচ আছে সাড়ে ৮ ভাগের কম। (ঢাকায় কতটা সবুজ দরকার, কতটা আছে জানাল বুয়েট, প্রথম আলো, ২০ মার্চ ২০২৩)। এসব কারণে গ্রীষ্মকালে চারপাশে সবুজ এলাকার তুলনায় ঢাকার অধিবাসীদের গরমের অনুভূতি ও কষ্ট বেশি হয়।
রাজধানী ঢাকায় সবচেয়ে বেশি অভাব হলো, বুক ভরে নিশ্বাস নেওয়ার মতো এক চিলতে খোলা জায়গা, মাঠ, পার্ক ইত্যাদির। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষা অনুসারে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ কিংবা পার্ক নেই। ঢাকার আয়তন ও জনসংখ্যা বিবেচনায় পার্ক ও খেলার মাঠের জন্য যথাক্রমে ১ হাজার ১৩৭ একর এবং ১ হাজার ৮৭৬ একর এলাকা বরাদ্দ রাখা উচিত, অথচ পার্ক আছে মাত্র ২৭১ একর জায়গাজুড়ে এবং খেলার মাঠের জন্য রয়েছে কেবল ২৯৪ একর। (ঢাকার দুই সিটির ৩৭টি ওয়ার্ডে নেই কোনো খেলার মাঠ কিংবা পার্ক, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বাংলা, ১৮ জুন ২০২১)
এ রকম একটা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার পান্থপথ, কারওয়ান বাজার, কাঁঠালবাগান ও হাতিরপুল এলাকার একমাত্র সবুজ উদ্যান পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষা করা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোধগম্য না হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশেষ করে, যখন সরকারের একাধিক উপদেষ্টা গাছ, মাঠ,পার্কসহ পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার ছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন সময় তাঁদের বক্তৃতা, বিবৃতি, লেখালেখির মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে পার্ক ও উন্মুক্ত মাঠে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণের বিরোধিতা করেছেন।
যেমন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ২০২২ সালের এপ্রিলে রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানা নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বলেছিলেন, ‘একটা দেশের নগর–পরিকল্পনা কতটা বিধ্বস্ত হলে মাঠের জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হয়!’ (দেশব্যাপী মাঠ রক্ষার আন্দোলন হবে, সমকাল, ২৭ এপ্রিল ২০২২)