অবশ্য এভাবে শুধু অভিযুক্ত হলেই কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হলে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ রয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সূত্র জানায়, তারাও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। এটি নিয়ে তারা দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কয়েকজন আইন ও মানবাধিকারবিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা মনে করছেন, এ ধরনের বিধানে সমস্যা হবে না। কারণ, আইনে যেসব অপরাধের কথা বলা হবে, সেগুলো বিশেষ ধরনের গুরুতর অপরাধ। প্রাথমিক একটি তদন্তে সত্যতা পেলেই তাঁদের অভিযুক্ত করা হবে।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা ও গবেষণা করে তাঁরা এ–সংক্রান্ত সুপারিশ করেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ গুরুতর অপরাধ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হলে তাঁকে এবং গুম কমিশনের তদন্তে যাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা—এ রকম একটি বিশেষ আইন করে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের নির্বাচনের অঙ্গন থেকে দূরে রাখা যায়। এ বিষয়ে তাঁরা একটি আইনের খসড়া দেবেন, যাতে সরকার এটিকে আইনে পরিণত করতে পারে।
শেষ পর্যন্ত যদি এ ধরনের আইন করা হয়, তাহলে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি বড় অংশ আগামী নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে যেতে পারেন। ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধেও ট্রাইব্যুনালে মামলা আছে। এগুলোর তদন্ত চলছে। যদি তদন্ত শেষে চার্জশিট হয়, আর বিশেষ আইনটি কার্যকর হয়—তখন তাঁরা নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।